ডক্টর পুষ্পজিৎ রায় আমাদের জেলার (উত্তর দিনাজপুর) লোকসংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারে একজন নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। বহু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন ও উৎসাহ দিয়েছেন। দিনাজপুর জেলার (পশ্চিম দিনাজপুর) প্রাচীনতম লোক সংস্কৃতি ‘খন গান’। নতুন শস্যকে কেন্দ্র করেই এই ‘খন গান’। এই গানের বহু আসরে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন এবং লোকশিল্পীদের যথেষ্ট উৎসাহ দিয়েছেন।
একটা ঘটনা বিশেষ ভাবে মনে পড়ছে। সালটা হবে সম্ভবত ২০০৬ বা ২০০৭। মার্চ মাস। সবে শীতকাল তখন পড়তির মুখে। রায়গঞ্জ বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অধীনস্থ তাহেরপুর গ্রামে (পুষ্পজিৎদার আদি বাড়ি যেখানে) খন গানের আসরের আয়োজন হয়েছে। বেশ ছোটখাট একটা প্যান্ডেল করে সেখানে আসরের আয়োজন হয়েছে। পুষ্পজিৎদা সেখানে আমাদের সঙ্গে গিয়ে বললেন “না, এখানে আসর হবে না।”
- “তবে কোথায়?”
তিনি তাঁদেরই একটা জমি বা মাঠ দেখিয়ে বললেন, “ওই জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু (ঢিপি) জায়গা। ওখানে আসর বসবে।” বেশ, তাই হল। এবং সেই জায়গাটার নামকরণ করলেন ধানসিঁড়ি। বেশ জমজমাট আসর বসল। ওইখানে আমরা অনেকবার খন গানের আসর বসিয়েছি।
পুষ্পজিৎদা আমাদের জেলার বিভিন্ন গ্রামে লোকসংস্কৃতির ওপর কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন। অনেক গ্রামেই কর্মশালা হয়েছে। তবে, উল্লেখযোগ্য গ্রামগুলি হল দুর্গাপুর, হেমতাবাদ, রসাখোয়া, পানিশালা। অবশ্যই তিনি থাকতেন কর্মশালার প্রধান বক্তা। তাঁর মূল্যবান বক্তব্য কর্মশালাকে প্রাণবন্ত করে তুলত। বহু ধরনের লেখালেখিতে তিনি আমাদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতেন। রায়গঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘উত্তরাধিকার’ মাসিক পত্রিকায় তাঁর অনেক মূল্যবান লেখা দিয়েছিলেন।
Commentaires